আইভিএফ কি (What is IVF in Bengali)
- Published on January 30, 2023

Table of Contents
সন্তানলাভের স্বপ্নপূরণ আইভিএফ-এ
শুধু বংশরক্ষা নয়, সংসার জীবনে পরিপূর্ণতা আনে সন্তান। কিন্তু বিশ্বায়নের যুগে পারিপার্শ্বিক নানান জটিলতা সন্তানলাভের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমীক্ষা বলছে, বিশ্বে প্রতি ছয় দম্পতির মধ্যে এক জোড়া দম্পতি সন্তানহীনতার সমস্যায় ভুগছে। আশার কথা হল, এদের জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে সহায়ক গর্ভাধান বা অ্যাসিস্টেড কনসেপশন পদ্ধতির বিকল্প বন্দোবস্ত রয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সফল ও জনপ্রিয় হল আইভিএফ।
আইভিএফ কথার অর্থ
আইভিএফ-এর পুরো কথাটা হল, ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন। ভিট্রো কথার অর্থ শরীরের বাইরে। যে পদ্ধতিতে শরীরের বাইরে কৃত্রিম পরিবেশে জীবন সৃষ্টি করা হয়, তাকে বলে ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন। চলতি কথায়, টেস্টটিউব বেবি, নলজাতক শিশু।
আইভিএফ চিকিৎসা
প্রজননক্ষমতা বর্ধনকারী ওষুধ আর প্রযুক্তির মেলবন্ধনে বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক ধাপে সম্পন্ন হয় আইভিএফ। ওষুদের সাহায্যে প্রথমে উৎকৃষ্ট ডিম্বাণু তৈরি করা হয়। সেই ডিম সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে উৎকৃষ্ট শুক্রাণুর সঙ্গে মিলনসাধন করে এক বা একাধিক ভ্রূণের সৃষ্টি হয়। এরপর ক্যাথিটারের সাহায্যে ভ্রূণ মায়ের জরায়ুতে প্রতিস্থাপিত করা হয়। বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত এই পদ্ধতিটি কিছুটা ধকলযুক্ত, সময়সাপেক্ষ ও ব্যায়সাপেক্ষ হলেও এতে সন্তানলাভের সম্ভাবনা ৪০-৬০ শতাংশ।
কখন আইভিএফ-এর সাহায্য নিতে হবে
কোনও দম্পতি যদি এক বছর চেষ্টা করার পরও সন্তানধারণ না করতে পারে, সেক্ষেত্রে তাদের প্রজনন ক্ষমতার সমস্যা আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে হীনমন্যতা বা লোকলজ্জায় না ভুগে যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া যাবে, তত ভাল। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর প্রথমে ওষুধ বা ইনঞ্জেকশন দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন চিকিৎসকেরা। অনেক সময়ে ল্যাপরোস্কোপি-হিস্টিরিয়োস্কোপি করা হয়। এতেও কাজ না হলে আইইউআই (ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন) বা আইভিএফ-এর (ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) সাহায্য নেওয়া হয়।
১) নারীর প্রজনন অক্ষমতায় আইভিএফ- প্রতি ১৪ জন মহিলার মধ্যে এক জনের সন্তানধারণে সমস্যা থাকে। এক্ষেত্রে বয়স বড় ফ্যাক্টর। কারণ, যত বয়স বাড়ে ডিম্বাণুর সংখ্যা ও গুণমান তত কমতে থাকে। মহিলার বয়স ৪০ বা তার বেশি হলে আইভিএফ-এর সাহায্য নেওয়া ভাল। অনেক সময় ডিম্বনালীতে (ফ্যালোপিয়ান টিউব) সমস্যা বা ব্লক থাকলে ডিমের নিষিক্ত হওয়ার পথে বা ভ্রূণের জরায়ুতে যাওয়ার পথে বাধা হয়। আইভিএফ পদ্ধতিতে এই দু’টি ধাপ শরীরের বাইরে ল্যাবরেটরিতে সম্পন্ন হয় বলে সমস্যাটি এড়ানো যায়। আবার যেসব মহিলার ঋতুস্রাব অনিয়মিত, ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসে ডিম্বাণু আসে না, তাদের ক্ষেত্রে আইভিএফে সুফল মেলে। এন্ডোমেট্রিয়াসিসের সমস্যায় আইভিএফ কার্যকরী। জরায়ুতে ফাইব্রয়েড (টিউমার) থাকলে নিষিক্ত ডিম প্রতিস্থাপনে সমস্যা হয়। আইভিএফ-এ এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। ডিম্বনালী কেটে বা আটকে বন্ধ্যাত্বকরণ করার পর কোনও কারণে আবার গর্ভধারণ করতে চাইলে আইভিএফ করা যেতে পারে।
২) পুরুষ প্রজনন অক্ষমতায় আইভিএফ- অনেক সময়ই পুরুষের শুক্রাণুর ঘনত্ব (কনসেনট্রেশন), সচলক্ষমতা (মবিলিটি) বা আকার-আয়তনে (মরফোলজি) সমস্যার জন্য সন্তানধারণে সমস্যা হয়। এক্ষেত্রে আইভিএফ-এ সুফল মেলে। পুরুষসঙ্গী সহবাসে অক্ষম হলে বা ঠিকমতো বীর্যক্ষরণ না হলে অন্য দাতার থেকে শুক্রাণু (ডোনার স্পার্ম) নিয়ে গর্ভধারণে আইভিএফ কার্যকরী ধাপ।
আইভিএফ-এর প্রস্তুতি
চিকিৎসা শুরুর আগে নিজের শরীর-মন প্রস্তুত করতে হবে। ইতিবাচক মনোভাব এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সহযোগিতা দরকার। উৎকণ্ঠা বা দুশ্চিন্তায় থাকলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই স্ট্রেস কমাতেই হবে। শারীরিক ভাবেও সুস্থ-সবল থাকতে হবে। নিয়মিত হাঁটাচলা, যোগব্যায়াম করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। মদ্যপান বা ধূমপান বা নেশার বস্তু পরিত্যাগ করতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। প্রস্তুতি-পর্বে চিকিৎসার ধাপগুলি নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে বিশদে আলোচনা করা দরকার। জরায়ুতে ক’টি ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হবে তা আগেই ঠিক করে নিতে হবে।
মহিলাদের শারীরিক পরীক্ষা
১) ওভারিয়ান রিজার্ভ টেস্ট- উদ্দেশ্য ডিম্বাণুর সংখ্যা ও গুণমাণ পরীক্ষা। অ্যান্ট্রাল ফলিকিউল কাউন্ট, রক্তে ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (এফএসএইচ) ও অ্যান্টি মুলেরিয়ান হরমোনের (এএমএইচ) মাত্রা নির্ণয় করে এই পরীক্ষা হয়। বেশি এএমএইচ থাকার অর্থ, ‘ওভারিয়ান রিজার্ভ’ ভাল বা যথেষ্ট সংখ্যায় ডিম রয়েছে শরীরে। উল্টোদিকে এফএসএইচ বেশি থাকার অর্থ ‘ওভারিয়ান রিজার্ভ’ কমে আসছে।
২) হাইকোসি- পুরো কথাটা হিসটেরোস্যালপিঙ্গো কনট্রাস্ট সোনোগ্রাফি। আলট্রাসাউন্ডের সাহায্যে এই পরীক্ষায় ফ্যালোপিয়ান টিউবের পরিষ্কার ছবি পাওয়া যায় এবং সমস্যা রয়েছে কি না জানা যায়।
৩) হরমোন পরীক্ষা- কী ওষুধ দেওয়া হবে ঠিক করতে ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন, টেস্টোস্টেরন, থাইরয়েড, প্রোল্যাকটিন ইত্যাদি হরমোন পরীক্ষা করে দেখে নেন চিকিৎসকেরা।
পুরুষদের শারীরিক পরীক্ষা
হরমোন ও রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান পরীক্ষা করার জন্য পুরুষসঙ্গীর সিমেন অ্যানালাইসিস টেস্ট করা হয়।
আইভিএফ পদ্ধতি
১) ডিম তৈরি- প্রথম ধাপে ইনজেকশন দিয়ে ভাল ডিম্বাণু তৈরির চেষ্টা করা হয়। সাধারণত প্রতি মাসে একটা ডিম ফোটে। কিন্তু এক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগের ফলে একাধিক ডিম পরিপক্ক হয়। যদি ওষুধ দিয়েও পর্যাপ্ত সংখ্যায় ডিম্বাণু তৈরি না করা যায় তখন দাতার ডিম্বাণু নিয়ে আইভিএফ করা হয়।
২) ডিম সংগ্রহ- ঋতুচক্রের দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন থেকে ফলিকিউলার স্টাডির মাধ্যমে ডিম্বাণু উৎপাদনের বিষয়টি তত্ত্বাবধান ও কবে শরীরের বাইরে বার করে আনা হবে তা নির্ণয় করা হয়। সেই মতো দিন দেখে আর একটি ইনজেকশন দেওয়া হয় যা ডিম ফাটিয়ে ডিম্বাণুকে বাইরে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে। এই ইনজেকশন দেওয়ার ৩২-৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আলট্রা সোনোগ্রাফির সাহায্যে ডিম্বাণুগুলিকে বার করে আনা হয়।
৩) শুক্রাণু সংগ্রহ- একই দিনে পুরুষসঙ্গীর শুক্রাণু সংগ্রহ করে (ডোনার স্পার্মও ব্যবহার হতে পারে) পরীক্ষাগারে রেখে দেওয়া হয়।
৪) নিষিক্তকরণ- ডিম্বাণু ও শুক্রাণু পরস্পরকে নিষিক্ত করে ভ্রূণ তৈরি হয় চিরাচরিত পদ্ধতিতে। অথবা শুক্রাণুকে সরাসরি ডিম্বাণুতে ইঞ্জেক্ট করে ভ্রূণ তৈরি করা হয় (আইসিএসআই)।
৫) ভ্রূণ প্রস্তুতি ও স্থাপন- ভ্রূণ তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে তা ইনকিউবেটরে রাখা হয়। এই সময় একটি ছোট্ট পরীক্ষা করা হয় (প্রিইমপ্ল্যান্টেশন জেনেটিক টেস্টিং) যাতে জিনগত কোনও ত্রুটি রয়েছে কি না তা জানা যায়। পাঁচ থেকে ছ’দিনের মাথায় আট কোষ, ষোলো কোষ বা ব্লাস্টোসিস্ট অবস্থায় ভ্রূণ মায়ের গর্ভে প্রতিস্থাপিত করা হয় ক্যাথিটারের সাহায্যে। অনেক সময় দু’টি বা তিনটি ভ্রূণ প্রতিস্থাপিত করা হয়। এতে একদিকে যেমন গর্ভধারণে সফলতার হার বাড়ে, অন্যদিকে তেমনই যমজ বা তিনটি সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা থেকে যায়।
আইভিএফ-এর সুবিধা
১) আইভিএফ-এ সাফল্যের হার বেশি। বিশেষ করে ৩৫ এর নীচে যাঁদের বয়স, তাঁদের ক্ষেত্রে। তবে বয়স বেশি হলে সাফল্যের হার কমে।
২) একাধিক বার চেষ্টা করা যায়।
৩) দম্পতির ডিম্বাণু বা শুক্রাণুতে সমস্যা থাকলে পরিচিত বা অপরিচিত দাতার কাছ থেকে সংগ্রহ করা যায়।
৪) যে সব ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেও প্রজনন অক্ষমতার সঠিক কারণ জানা যায় না, সেখানে আইভিএফ কাজে আসে।
৫) প্রজনন সংরক্ষণে আইভিএফের কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। যেমন, ক্যানসারের চিকিৎসা (কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন) প্রজনন ক্ষমতায় খারাপ প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরুর আগে ডিম বা শুক্রাণু সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা যায় বা অনেকসময় ভ্রূণও সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
৬) জরায়ুর সমস্যার কারণে সন্তানধারণে অক্ষম হলে আইভিএফ পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে দম্পতির নিজস্ব ভ্রূণ অন্য মহিলার গর্ভে প্রতিস্থাপিত (সারোগেট বা জেসটেশানাল ক্যারিয়ার) করা যায়।
৭) এই পদ্ধতিতে কখন গর্ভধারণ হবে সেই সময়ের উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ থাকে।
আইভিএফ-এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া
ভাল ডিম তৈরির জন্য যে হরমোন (এইচসিজি) দেওয়া হয় তাতে ওভারিয়ান হাইপারস্টিমুলেশন সিনড্রোম হয়। এতে ডিম্বাশয়ে ফোলা ভাব ও অল্প ব্যাথা হয়। স্বাভাবিক প্রসবের উপসর্গ যেমন মাথা ব্যাথা, বমি, দুর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্তনে ভার ভাব থাকতে পারে। তবে, এগুলো কোনওটাই দীর্ঘমেয়াদী বা শরীরের পক্ষে খুব ক্ষতিকর নয়। অনেক সময় ওভারিয়ান হাইপারস্টিমুলেশন সিনড্রোমের জেরে দ্রুত ওজনবৃদ্ধি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। আগে একটা ধারণা ছিল যে ডিম ফোটানোর জন্য যে ওষুধগুলো প্রয়োগ করা হয় তাতে স্ত্রী জননঅঙ্গে ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ে। যদিও এই ধারণার স্বপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়নি গবেষণায়।
কোথায় আইভিএফ করাব
সন্তানলাভে অক্ষমতার চিকিৎসায় একটা বড় সমস্যা হল পছন্দসই চিকিৎসক ও ক্লিনিক খোঁজাখুঁজিতে অনেকটা সময় নষ্ট হয়। এক্ষেত্রে কী কী করণীয় জেনে সেই মতো পদক্ষেপ করলে সময় ও হয়রানি- দু’টোর হাত থেকেই মুক্তি মেলে।
১) প্রথমেই যে চিকিৎসক বা ক্লিনিকে যাচ্ছেন, সেখানে সাফল্যের হার দেখে নিতে হবে।
২) লোকমুখে নয় নিজে গিয়ে এবং চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার পরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। চিকিৎসক ধৈর্য ধরে কথা শুনছেন কি না বা তাঁর ব্যবহার কেমন দেখতে হবে। আইভিএফের সাফল্য অনেকটাই চিকিৎসকের অভিজ্ঞতার উপরে নির্ভর করে।
৩) মনে যে প্রশ্নগুলো আসছে সেগুলো জিজ্ঞাসা করতে দ্বিধা করা উচিত নয়। চিকিৎসা শুরুর আগে স্পষ্ট ধারণা থাকা ভাল। বিশেষ করে খরচ আর কতটা সময় লাগবে জেনে নিয়ে সেই মতো তৈরি হতে হবে।
৪) ক্লিনিকের পরিকাঠামো, পরিচ্ছন্নতা-বোধ ইত্যাদি বিষয়গুলি লক্ষ্য করতে হবে।
৫) স্বাস্থ্যকর্মীদের আচার ব্যবহার খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৬) বাড়ি খেকে ক্লিনিকের দূরত্ব খুব বেশি হলে বারবার যাতায়াতে অসুবিধা হতে পারে।
আইভিএফ পরবর্তী পদক্ষেপ
জরায়ু যাতে ভ্রূণ ধরে রাখতে পারে তার জন্য কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। এরপর দু’সপ্তাহের অপেক্ষা। এই সময় জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হলেও শারীরিক পরিশ্রম, ওজন তোলা, দৌড়াদৌড়ি ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। নিয়মিত ফোলিক অ্যাসিড নিতে হবে। দু’সপ্তাহ পরে রক্ত পরীক্ষা করে যায় যায় গর্ভধারণ সফল হল কিনা। রেজাল্ট ‘পজিটিভ’ হলে গর্ভবতীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করতে হবে। ‘নেগেটিভ’ হলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আরও কয়েকবার চেষ্টা করা যায়। প্রথমবারের অতিরিক্ত ডিম ‘ফ্রিজ’ করা থাকলে পরের বারে খরচ আর সময় দু’টোই বাঁচে।
Related Posts
Written by:
Dr Souren Bhattacharjee
Consultant, Birla Fertility & IVF
Dr Souren Bhattacharjee possesses 32+ years of experience as an IVF Specialist. He has extensive experience in the management of male and female infertility, including IVF and Ultrasound. Along with this, Dr Souren has encountered more than 6000 IVF cycles with a very high success rate. Dr Bhattacharjee is a graduate of Gauhati University, 1983. He earned a diploma in gynaecology and obstetrics in 1991 from Dr MGR Medical University. In 1994, he did his Member Royal College of Obstetricians & Gynaecologists from London and in 2009, he did his Fellow of the Royal College of Obstetricians & Gynaecologists from London.
Over 32 Years of Experience
Kolkata, West Bengal
Our Services
Fertility Treatments
Problems with fertility are both emotionally and medically challenging. At Birla Fertility & IVF, we focus on providing you with supportive, personalized care at every step of your journey towards becoming a parent.Male Infertility
Male factor infertility accounts for almost 40%-50% of all infertility cases. Decreased sperm function can be the result of genetic, lifestyle, medical or environmental factors. Fortunately, most causes of male factor infertility can be easily diagnosed and treated.We offer a comprehensive range of sperm retrieval procedures and treatments for couples with male factor infertility or sexual dysfunction.
Donor Services
We offer a comprehensive and supportive donor program to our patients who require donor sperm or donor eggs in their fertility treatments. We are partnered with reliable, government authorised banks to source quality assured donor samples which are carefully matched to you based on blood type and physical characteristics.Fertility Preservation
Whether you have made an active decision to delay parenthood or are about to undergo medical treatments that may affect your reproductive health, we can help you explore options to preserve your fertility for the future.Gynaecological Procedures
Some conditions that impact fertility in women such as blocked fallopian tubes, endometriosis, fibroids, and T-shaped uterus may be treatable with surgery. We offer a range of advanced laparoscopic and hysteroscopic procedures to diagnose and treat these issues.Genetics & Diagnostics
Complete range of basic and advanced fertility investigations to diagnose causes of male and female infertility, making way for personalized treatment plans.Our Blogs
To Know More
Speak to our experts and take your first steps towards parenthood. To book an appointment or to make an enquiry, please leave your details and we will get back to you.