বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কম ও সন্তানহীনতার সমস্যা (Low Sperm Count in Bengali)
- Published on February 02, 2023

আমাদের সমাজে নারীর প্রজননে অক্ষমতার সমস্যা নিয়ে যতটা আলোচনা হয়, পুরুষের নিয়ে ততটা নয়। অথচ, সমীক্ষা বলছে বিশ্বে সন্তানহীনতার সমস্যায় প্রতি তিনটি ঘটনার ক্ষেত্রে একটিতে পুরুষসঙ্গী দায়ী। সন্তানধারণের জন্য যেমন উৎকৃষ্ট ডিম্বাণুর প্রয়োজন, তেমনই সুস্থ-সবল-সচল শুক্রাণুর প্রয়োজন। সাধারণ ভাবে ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলনের জন্য পুরুষের প্রতি মিলিলিটার বীর্যরসে (সিমেন) অন্তত ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটি শুক্রাণুর প্রয়োজন। শুক্রাণুর সংখ্যা এর থেকে কম হলে বীর্যক্ষমতার সমস্যা রয়েছে (লো স্পার্ম কাউন্ট) বলে ধরে নেওয়া হয়। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে বলে ওলিগোস্পার্মিয়া। আর বীর্যে শুক্রাণু একেবারেই অনুপস্থিত থাকলে তাকে বলে অ্যাজোস্পার্মিয়া।
Table of Contents
শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ (Low Sperm Count Causes in Bengali)
১) মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্রস্থি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা। শুক্রাণু তৈরির প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। অণ্ডকোষ বা শুক্রাশয়ের (টেস্টিকল) মধ্যে একটি পরিণত শুক্রাণু কোষের গঠন সম্পন্ন হতে প্রায় ৩ মাস সময় লাগে। এপিডিডিমিসে (পুরুষ প্রজননতন্ত্রের একটি নালি) সঞ্চিত এই শুক্রাণু শিশ্ন (পেনিস) থেকে বীর্যস্খলনের (ইজাকুলেশন) সময় বীর্যরসের (সিমেন) সঙ্গে মিশে নির্গত হয়। এই এতগুলো ধাপের মধ্যে যে কোনও একটিতে সমস্যা বা ‘ব্লকেজ’ তৈরি হলে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যেতে পারে।
২) অনেকসময় বীর্যরস বাইরে না বেরিয়ে ব্লাডারে চলে যায় (রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন)। ব্লাডার বা প্রস্টেটে অস্ত্রোপচার, শিরদাঁড়ায় আঘাত, ডায়াবেটিস ইত্যাদি কারণ থেকে এই সমস্যা হতে পারে।
৩) প্রজননতন্ত্রে কোথাও কোনও ইনফেকশন হলে, যেমন এপিডিডিমাইটিস, অর্কিটিস কিংবা গনোরিয়া, এইচআইভি-র মতো রোগের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়।
৪) শরীরে হরমোনের ভারসাম্যের অভাবে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যেতে পারে। বেশ কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। যেমন, টেস্টোস্টেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি, কেমোথেরাপি ইত্যাদি। আবার ক্যানসার বা টিউমারের মতো অসুখ হলেও হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়।
৫) বেশ কিছু রাসায়নিকের সংস্পর্শে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায় বলে গবেষণায় জানা গিয়েছে। সীসা বা এই ধরনের ‘হেভি মেটেরিয়াল’, বেঞ্জিন, জাইনিল, কীটনাশক প্রভৃতির ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে পুরুষ প্রজননতন্ত্রে। উচ্চমাত্রা রেডিয়েশনের সংস্পর্শে এলে শুক্রাণুর উৎপাদন কমে যায়।
৬) বাহ্যিক কারণে পুরুষ প্রজননঅঙ্গ গরম হয়ে গেলে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যেতে পারে। এই জন্য দীর্ঘ সময় ধরে ল্যাপটপ কোলে বসে থাকা বা আঁটোসাঁটো অন্তর্বাস পরতে বারণ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৭) মদ্যপান, ধূমপান বা তামাকঘটিত যে কোনও নেশা শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে।
৮) অবসাদ, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ ইত্যাদি মানসিক সমস্যা পরোক্ষে সন্তানলাভে অক্ষমতার কারণ।
৯) অতিরিক্ত ওজনের ফলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় ও শুক্রাণুর সংখ্যা কমে।
১০) গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শুধু মহিলা নয়, ৪০ বছরের পর পুরুষদের ক্ষেত্রেও সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা কমে আসে।
শুক্রাণুর সংখ্যা কম থাকার লক্ষ্মণ (Low Sperm Count Symptoms in Bengali)
বাইরে থেকে বিষয়টি বোঝার উপায় নেই। তবে, কোনও দম্পতি যদি এক বছর চেষ্টা করার পরও সন্তানধারণ না করতে পারে, সেক্ষেত্রে পুরুষসঙ্গীর বীর্যরসে শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান যাচাই করে এই সমস্যার কথা জানা যায়। অনেকের আবার যৌনজীবনে অনিচ্ছা বা বীর্যক্ষরণে সমস্যার কারণ খুঁজতে গিয়ে এটা জানতে পারে। পুরুষের শরীরে কম লোম বা স্তনের বৃদ্ধি থেকে হরমোনের অস্বাভাবিকত্ব আন্দাজ করা যেতে পারে। অনেকসময় অণ্ডকোষ বা সংলগ্ন এলাকায় ব্যাথা, ফোলা ভাব থাকে।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণমান পরীক্ষা (Sperm count and quality test in Bengali)
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণমান জানার জন্য ‘সিমেন অ্যানালাইসিস টেস্ট’ করতে দেন চিকিৎসকেরা। সিমেন বা বীর্যরস সংগ্রহের পর মাইক্রোস্কোপের তলায় রেখে দেখা হয় গ্রিডের প্রতি বর্গে কত শুক্রাণু রয়েছে। কখনও আবার এই শুক্রাণু গণনার জন্য কম্পিউটারের সাহায্য নেওয়া হয়। সাধারণ ভাবে প্রতি মিলিলিটার বীর্যরসে ৪০-৩০০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকে। ১৫ মিলিয়নের কম সংখ্যায় শুক্রাণু থাকলে সন্তানলাভে সমস্যা হয়। প্রাথমিক এই পরীক্ষার পরে সমস্যার গভীরে যাওয়ার জন্য আরও কিছু পরীক্ষা করতে দেন চিকিৎসকেরা। যেমন উচ্চ তরঙ্গ আলট্রাসাউন্ড প্রবাহের সাহায্যে শুক্রাশয় ও সংযুক্ত গঠন খতিয়ে দেখা হয়। পিটুইটারি গ্রন্থি ও শুক্রাশয় নিঃসৃত কিছু হরমোনের মাত্রা জানার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়। শুক্রাণু মূত্রথলিতে চলে যাচ্ছে কিনা বোঝার জন্য পোস্ট-ইজাকুলেশন ইউরিন্যালাইসিস করা হয়। জিনগত সমস্যা নির্ধারণের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে শুক্রাশয়ের বায়োপ্সি করেও দেখা হয় শুক্রাণুর সংখ্যা ঠিক আছে কি না। প্রস্টেটে কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা বা শুক্রবাহী নালীতে কোনও ব্লকেজ আছে কি না জানতে ‘ট্রান্সরেকটাল আলট্রাসাউন্ড’ করা হয় অনেক সময়।
শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ানোর উপায় (Ways to increase sperm count in Bengali)
সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে সমস্যা অনুযায়ী সমাধানের পথ দেখান চিকিৎসকেরা। যেমন, প্রজনন নালীতে (রিপ্রোডাকটিভ ট্র্যাক্ট)ইনফেকশন থাকলে অ্যান্টিবায়েটিক দেওয়া হয়, বীর্যক্ষরণে সমস্যা থাকলে ওষুধ বা প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং করার পরামর্শ দেওয়া হয়। হরমোনের সমস্যা থাকলে তার প্রয়োজনীয় ওষুধ বা চিকিৎসা রয়েছে। আবার অনেকসময় অস্ত্রোপচার করেও সমস্যার সমাধান সম্ভব। এছাড়া, সুস্থ জীবনযাত্রা শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। মদ্যপান, ধূমপান বা নেশা পরিত্যাগ করলে শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ে। স্ট্রেস দূর করতে হবে। ওজন কমিয়ে লক্ষ্যণীয় ভাবে শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ানো যায়। যদি ওজন না-ও কমে তবু যোগব্যায়াম বা স্বাস্থ্যচর্চা করে ‘অ্যাকটিভ’ থাকলে ভাল ফল মেলে।
শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে উপযোগী খাবার (Foods to increase sperm count in Bengali)
১) ফলের মধ্যে পেয়ারা, অ্যাভোক্যাডো, ব্লু বেরি, বেদানা ও কলা শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যাভোক্যাডো হল এমন একটি ফল যাতে আছে ৪১% ফোলেট। এছাড়াও ভিটামিন ই, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, এবং জিঙ্ক রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর ব্লু বেরি শুক্রাণুর আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে। বেদানা যৌনক্ষমতা বাড়ায়। কলার মধ্যে রয়েছে এনজাইম ব্রোমেলেইন যেটা ঝট করে সব খাবারে পাওয়া যায় না। প্রদাহরোধী এই এনজাইম শুক্রাণুর উৎপাদন ও সংখ্যা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে এই এনজাইম।
২) বিভিন্ন শাকপাতা বিশেষ করে পালংয়ে প্রচুর পরিমাণে ফোলিক অ্যাসিড থাকে। স্পার্মোটেজেনেসিস বা শুক্রাণুর উৎপাদনে এটি খুবই কার্যকরী। অ্যাসপারাগাসে আছে ভিটামিন সি, যা শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে এবং ফ্রি রেডিক্যালসের সঙ্গে লড়াই করে টেস্টিকুলার সেলকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬ ও ফোলেট, তিনটেই প্রচুর পরিমাণে থাকে বেলপেপারে।
৩) পুরুষ হোক বা নারী, যৌনস্বাস্থ্যের জন্য ডিম খুবই কার্যকরী একটি খাবার। ডিমে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, জিঙ্ক এবং ভিটামিন বি১২। সুস্থ ও সবল শুক্রাণু উৎপাদনে সাহায্য করার পাশাপাশি ফ্রি রেডিক্যাল থেকে রক্ষা করে এই প্রোটিন।
৪) পুরুষদের শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হল ফ্যাট আর প্রোটিন সমৃদ্ধ আখরোট। উপকারী ফ্যাট শুক্রাণুর সেল মেমব্রেন তৈরিতে কার্যকরী ভূমিকা নেয়। আখরোটে উপস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড অণ্ডকোষে রক্তের প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে, যার ফলে শুক্রাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। এছাড়াও আখরোটে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা শরীরকে টক্সিনমুক্ত করে।
৫) ডার্ক চকোলেটে থাকে এল-আর্জিনিন এইচসিআই, এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা শুক্রাণুর সংখ্যা ও পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
৬) মাছে যে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে তা পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণমান বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় জিঙ্ক রয়েছে মাছের মধ্যে। রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি২।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নমালা:
১) সন্তানলাভের জন্য জন্য শুক্রাণুর সংখ্যা কত থাকা দরকার?
এমনিতে একটি ভ্রূণের জন্য একটি শুক্রাণু ও ডিম্বাণু যথেষ্ট। কিন্তু ঘটনা হল, পুরুষদের বীর্যরসে শুক্রাণুর সংখ্যা প্রতি মিলিলিটারে ১৬ মিলিয়নের কম হলে তা প্রজননে অক্ষমতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণ ভাবে প্রতি মিলিলিটার বীর্যরসে ৪০-৩০০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকে। তবে, কম করে ২০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকলেই সন্তানলাভ সম্ভব।
২) কী ভাবে শুক্রাণুর সংখ্যা বা স্পার্ম কাউন্ট বাড়ানো যায়?
শরীরে ঠিক কী সমস্যার কারণে শুক্রাণুর সংখ্যা কমছে তা জানতে হবে আগে। ওষুধ বা চিকিৎসা, প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারে সেই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু সে তো চিকিৎসা আর চিকিৎসকের হাতে। আমরা, সাধারণ মানুষরা যেটা করতে পারি সেটা হল দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় একটা ডিসিপ্লিন আনতে পারি। মদ্যপান, ধূমপান বা অন্যান্য ক্ষতিকারক নেশার সামগ্রী ছাড়তে হবে। রাত জেগে কাজ বা মোবাইল, কোনওটাই শরীরের পক্ষে ভাল নয়। জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। এর সঙ্গে দরকার শারীরিক পরিশ্রম, যোগব্যায়াম। স্ট্রেস কমাতে হবে। ঢিলে অন্তর্বাস পরা, ক্ষতিকারক রাসায়নিকের সংস্পর্শে এলে পোশাক পরিবর্তন ও স্নান করার মতো সাবধানতাগুলি অবলম্বন করলে উপকার মিলতে পারে। সাপ্লিমেন্ট হিসাবে ভিটামিন ডি আর জিঙ্ক নেওয়া যায়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও সাপ্নিমেন্ট না নেওয়াই ভাল।
৩) বয়স বেশি হলে শুক্রাণুর সংখ্যা কী কমে যায়?
পুরুষদের শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধ হয় না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষদের বয়স কখনও বাধা হতে পারে না। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৪০ বছরের পর পুরুষদের ক্ষেত্রেও সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। আসলে যেটা হয়, পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুক্রাণুগুলি জেনেটিক মিউটেশনের মধ্যে দিয়ে যায়। এর ফলে শুক্রাণুর ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বেশি বয়সে সন্তানের জন্ম দিতে যেমন সমস্যা হয়, তেমনই জন্ম দেওয়ার পরেও শিশুর স্বাস্থ্যে খারাপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। এক্ষেত্রে শিশুর স্নায়ুতন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
Related Posts
Written by:
Dr Souren Bhattacharjee
Consultant, Birla Fertility & IVF
Dr Souren Bhattacharjee possesses 32+ years of experience as an IVF Specialist. He has extensive experience in the management of male and female infertility, including IVF and Ultrasound. Along with this, Dr Souren has encountered more than 6000 IVF cycles with a very high success rate. Dr Bhattacharjee is a graduate of Gauhati University, 1983. He earned a diploma in gynaecology and obstetrics in 1991 from Dr MGR Medical University. In 1994, he did his Member Royal College of Obstetricians & Gynaecologists from London and in 2009, he did his Fellow of the Royal College of Obstetricians & Gynaecologists from London.
Over 32 Years of Experience
Kolkata, West Bengal
Our Services
Fertility Treatments
Problems with fertility are both emotionally and medically challenging. At Birla Fertility & IVF, we focus on providing you with supportive, personalized care at every step of your journey towards becoming a parent.Male Infertility
Male factor infertility accounts for almost 40%-50% of all infertility cases. Decreased sperm function can be the result of genetic, lifestyle, medical or environmental factors. Fortunately, most causes of male factor infertility can be easily diagnosed and treated.We offer a comprehensive range of sperm retrieval procedures and treatments for couples with male factor infertility or sexual dysfunction.