ভ্রূণ স্থানান্তর কি (What is Embryo Transfer in Bengali)
- Published on February 03, 2023

Table of Contents
ভ্রূণ প্রতিস্থাপনে সন্তানলাভের সৌভাগ্য
কথায় বলে, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। আমাদের এই জীবনে চলার পথে কত চড়াই উতরাই, হাজারো বাধা। কিন্তু সবসময়ই সমস্যা যেমন থাকে, তেমন তার সমাধানও থাকে। যেমন, কোনও দম্পতি যদি এক বছর চেষ্টা করার পরও সন্তানধারণ না করতে পারে, সেক্ষেত্রে তাদের কোথাও একটা সমস্যা আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এই সমস্যাটি পুষে না রেখে ওই দম্পতি যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের কাছে যাবে, তত তাড়াতাড়ি এর সমাধান হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর প্রথমে ওষুধ বা ইনঞ্জেকশন দিয়ে সমস্যার কারণ দূর করার চেষ্টা করেন চিকিৎসকেরা। অনেক সময়ে ল্যাপারোস্কোপি-হিস্টিরিয়োস্কোপি করা হয়। এই সবে কাজ না হলে আইভিএফ পদ্ধতিতে ল্যাবরেটরিতেই উৎকৃষ্ট শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনসাধনে এক বা একাধিক ভ্রূণের সৃষ্টি করে তা ক্যাথিটারের সাহায্যে মায়ের জরায়ুতে প্রতিস্থাপিত করা যায়।
ভ্রূণ প্রতিস্থাপন পদ্ধতি
আইভিএফ-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও শেষ ধাপটি হল ভ্রূণ প্রতিস্থাপন। মহিলা ও পুরুষসঙ্গীর ডিম্বাণু ও শুক্রাণু (দাতার থেকেও সংগ্রহ করা হতে পারে) ল্যাবরেটরিতে নিষিক্তকরণের পরে ভ্রূণ তৈরি হয় চিরাচরিত পদ্ধতিতে বা শুক্রাণুকে সরাসরি ডিম্বাণুতে ইঞ্জেক্ট করে (আইসিএসআই)। ভ্রূণ তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে তা ইনকিউবেটরে রাখা হয়। পাঁচ থেকে ছ’দিনের মাথায় আট কোষ, ষোলো কোষ বা ব্লাস্টোসিস্ট অবস্থায় ভ্রূণ মায়ের গর্ভে প্রতিস্থাপিত করা হয়। সদ্য তৈরি ভ্রূণ ছাড়াও অনেকসময় সংরক্ষিত (ফ্রোজেন) ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়, যেটি আগে ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয়েছিল। একে বলে ফ্রোজেন এমব্রায়ো ট্রান্সফার বা এফইটি। গবেষণায় প্রমাণিত, সংরক্ষিত ভ্রূণের গুণগত মানে কোনও ফারাক হয় না।
ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের কাজটি অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে করতে হয়। এই পর্বে এক বা একাধিক ভ্রূণ সহযোগে ক্যাথিটার যোনির মধ্য দিয়ে জরায়ু গহ্বরের মাঝখানে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্যাথিটারের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করার জন্য আলট্রাসাউন্ডের সাহায্য নেন চিকিৎসকেরা। আদর্শ জায়গাটি (জরায়ুর উপর থেকে ১-২ সেন্টিমিটার ছেড়ে) খুঁজে পাওয়ার পর ভ্রূণ বা ভ্রূণগুলি এন্ডোমেট্রিয়ামে (উপর ও নীচের লাইনিং-এর মাঝে) স্থাপন করা হয়। এরপর ক্যাথিটারটি ধীরে বাইরে বার করে নিয়ে মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করা হয়, ভ্রূণ রয়ে গিয়েছে কিনা। কোনও কারণে ভ্রূণ রয়ে গেলে (বিরল ঘটনা) সঙ্গে সঙ্গে ক্যাথিটারটি পুনরায় প্রবেশ করিয়ে প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হয়।
ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পর
আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা বিশ্রামের পরে ক্লিনিকে ছেড়ে দেয়। তবে, বাড়িতে এক থেকে দু’দিন যতটা সম্ভব বিশ্রামে থাকাই ভাল। কারণ এই সময়ের মধ্যে ভ্রূণটি জরায়ুর দেওয়ালে জোড়ে (অ্যাটাচ)। পুরোপুরি ‘ইমপ্ল্যান্ট’ হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগে।
জরায়ু যাতে ভ্রূণ ধরে রাখতে পারে তার জন্য প্রোজেস্টেরন এবং কখনও কখনও ইস্ট্রোজেন দেওয়া হয়। এরপর দু’সপ্তাহের অপেক্ষা। এই সময় জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হলেও শারীরিক পরিশ্রম, ওজন তোলা, দৌড়াদৌড়ি ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। নিয়মিত ফোলিক অ্যাসিড নিতে হবে। দু’সপ্তাহ পরে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা যায় গর্ভধারণ সফল হল কিনা। আইভিএফ-এর ক্ষেত্রে বাড়িতে ‘হোম-কিট প্রেগন্যান্সি টেস্ট’ করতে বারণ করা হয়। কারণ আইভিএফ পদ্ধতিতে মহিলাদের শরীরে যে হরমোনগুলি প্রয়োগ করা হয়, তার জন্য অনেকসময় ‘ফলস পজিটিভ রিপোর্ট’ আসে।
সফল ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের লক্ষ্মণ
স্তনের পরিবর্তন- সফল ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের একেবারে প্রাথমিক লক্ষ্মণ হল স্তনের আকার বৃদ্ধি ও ব্যথা ভাব। গর্ভাবস্থার শুরুতে প্রসূতিদের স্তন আকারে বড় ও শক্ত দেখায়। অনেকের ব্যথা হয়। তবে আইভিএফ-এ যেহেতু ইস্ট্রোজেন হরমোন প্রয়োগ করা হয়, সেহেতু গর্ভধারণ সফল না হওয়া সত্ত্বেও স্তনের এই পরিবর্তন হতে পারে।
রক্তের ছোপ- ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের এক সপ্তাহ পরে নিম্নাঙ্গের অম্তর্বাসে রক্তের হালকা ছোপ বা দাগ (স্পটিং) দেখা যেতে পারে। জরায়ুর লাইনিং-এ ভ্রূণ আটকানোর সময় এই দাগ হওয়া স্বাভাবিক।
পেট ফোলা- ঋতুস্রাবের শুরুর সময় তলপেটে যেমন একটা ফোলা ভারী ভাব থাকে, তেমনটা ভ্রূণ প্রতিস্থাপন সফল হওয়ার পর অনুভূত হতে পারে। এটার কারণ হল গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে প্রসূতির শরীরে প্রোজেস্টেরনের লেভেল বেড়ে যায়। তলপেটে ফোলা ভাবের কারণ প্রোজেস্টেরন। তবে, এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যে সঙ্গে যন্ত্রণা হচ্ছে কি না। কারণ এটা তখন ওভারিয়ান হাইপারস্টিমুলেশন সিনড্রোমের (ওএইচএসএস) লক্ষ্মণ হতে পারে। আইভিএফ পদ্ধতিতে উর্বর ডিম্বাণু তৈরি করার জন্য যে হরমোন প্রয়োগ করা হয় তার জেরে ডিম্বাশয় ফুলে যায়। তবে, খুব কম ক্ষেত্রে (০.৫% – ৫ %) এটি চিন্তার কারণ হয়।
তলপেটে ব্যথা- তলপেটে হালকা মোচড়ের মতো ব্যথা হতে পারে। গর্ভাবস্থার শুরুতে অনেকের এই লক্ষ্মণ হয়। ভ্রূণকে ভালভাবে জায়গা করে দেওয়ার জন্য প্রোজেস্টেরন এই সময় সংশ্লিষ্ট পেশী ও লিগামেন্টগুলোকে দুর্বল করে দেয়। সেই কারণেই এই ব্যথা হয়।
মাথা ঘোরা- সাধারণ গর্ভধারণের ক্ষেত্রে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মাথায় বমি ভাব ও মাথা ঘোরার মতো লক্ষ্মণ দেখা যায়। কিন্তু আইভিএফ-এ সফল ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পরেই এই লক্ষ্মণ দেখা দেয়।
যোনিস্রাব- যোনিস্রাব বৃদ্ধি পাওয়া সফল ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পরে অত্যন্ত স্বাভাবিক একটা লক্ষ্মণ। হালকা সাদা বা স্বচ্ছ, তরল এই স্রাব জরায়ুতে সংক্রমণ হতে দেয় না।
ক্লান্তি ভাব ও দুর্বলতা- এই উপসর্গও প্রোজেস্টেরনের জন্য হয় এবং শুরু থেকেই এটা হয়।
ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পর উপরের এই লক্ষ্মণগুলোর কোনওটাই দেখা না দিলে চিন্তার কিছু নেই। কারণ বহু প্রসূতির ক্ষেত্রেই সফল গর্ভধারণের কোনও লক্ষ্মণ বা উপসর্গ থাকে না।
ব্যর্থ ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের লক্ষ্মণ
জরায়ুতে ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পরে-পরেই বোঝা যায় না, সফল হল কিনা। এর জন্য কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হয়। ভ্রূণ কোনও কারণে জরায়ুর দেওয়ালে প্রতিস্থাপিত না হতে পারলে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এই পরিস্থিতি নানা কারণে হতে পারে। ভ্রূণের গুণগত মানের জন্য এটা হতে পারে আবার জরায়ুতে কোনও সমস্যা থাকার জন্য এটা হতে পারে। আধুনিক জীবনযাত্রাও অনেকসময় গর্ভধারণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন ধূমপানের কারণে বা ওজন বেশি হলে ‘ইমপ্ল্যান্টেশনে’ সমস্যা হয়। দুশ্চিন্তা বা স্ট্রেসের জন্যও হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে সমস্যা হতে পারে। গোলমেলে বিষয় হল, যে লক্ষ্মণগুলো দেখে মনে করা হয় গর্ভধারণ সফল হয়েছে, সেগুলিই আবার ব্যর্থতার লক্ষ্মণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন,
তলপেটে ব্যথা ও রক্তপাত- ঋতুস্রাবের সময় শরীরে যে পরিবর্তনগুলো আসে, সেগুলো সবই গর্ভপাতের সময় অনুভূত হতে পারে। যেমন, তলপেটে ব্যথা, পিঠের নীচের দিকে ব্যথা, রক্তপাত, মাথা ঘোরা, বমি ভাব ইত্যাদি।
নেগেটিভ প্রেগন্যান্সি রেজাল্ট- প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে দেখা হয় শরীরে এইচসিজি হরমোনের উপস্থিতির হার। ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের দু’সপ্তাহ পরেও এই হরমোন শরীরে পাওয়া না গেলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা ‘নেগেটিভ’ ধরে নেওয়া হয়।
আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা- অনেকসময় প্রাথমিক লক্ষ্মণে মনে হয় সফল, এমনকী রক্ত পরীক্ষার ফলেও পজিটিভ রেজাল্ট আসে। কিন্তু তারপরে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় দেখা যায়, সফল হয়নি। এটা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে হতে পারে। যেমন, কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সি। যখন ভ্রূণ জরায়ুর দেওয়ালে গাঁথে না বা গাঁথার পরেও আর বাড়তে পারে না বা বিকশিত হতে পারে না, তখন তাকে কেমিক্যাল প্রেগন্যান্সি বলে। এক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষায় পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া যায় এবং ঋতুস্রাবও বন্ধ থাকে। তাই আপাত ভাবে মনে হয় গর্ভধারণ সফল হয়েছে। একমাত্র আলট্রাসাউন্ডে বোঝা যায় যে ভ্রূণ প্রতিস্থাপন আদপে ব্যর্থ হয়েছে।
অনেকসময় আবার গর্ভপাত হয়ে গেলেও টিস্যু জরায়ুর মধ্যেই থেকে যায় বলে বাইরে থেকে বোঝা যায় না।
এছাড়া ইক্টোপিক প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনাও থাকে আইভিএফে। যখন ভ্রূণ জরায়ুর মধ্যে না থেকে ফ্যালোপিয়ান টিউবে বন্দি হয়ে যায় তখন তাকে ইক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বলে। এক্ষেত্রে প্রেগন্যান্সি টেস্টে রেজাল্ট পজিটিভ আসে। কিন্তু পেটে ব্যথা, রক্তপাতের মতো লক্ষ্মণগুলো দেখা যায়। সময়ে এটি নির্ধারণ না হলে এবং চিকিৎসা না হলে প্রাণসংশয় পর্যন্ত হতে পারে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
ভ্রূণ প্রতিস্থাপন সফল হলে প্রসূতি বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে পরবর্তী চিকিৎসা হবে।
ব্যর্থ হলে বিরক্তি, অবসাদ, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি ভাবনা মনকে গ্রাস করে। এটা স্বাভাবিক। তা বলে এই ভাবনাগুলোকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপরে ভরসা রাখতে হবে। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা হলে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে হবে। ব্যায়াম, শরীরচর্চা, খাদ্যাভ্যাস ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় যদি কিছু পরিবর্তন আনার দরকার হয়, তা করতে হবে। সাধারণ ভাবে ভ্রূণ প্রতিস্থাপন ব্যর্থ হলে দুই থেকে তিন মাসের একটা সময় দিতে বলে। যাতে শরীর ও মন সেরে ওঠে সম্পূর্ণ ভাবে। সেই সময়ে চিকিৎসকও দেখে নেবেন, কোথায় গলদ থাকতে পারে। আইভিএফ-এর ভাল দিক হল বেশ কয়েকবার এই চেষ্টা করা যায়। আগের বারের অতিরিক্ত ভ্রূণ সংরক্ষণ করে রাখা থাকলে শুরুর ধাপ এড়ানো যায় এবং এক্ষেত্রে মাঝে সময়ের বিরতি দেওয়ারও দরকার হয় না।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নমালা
১) ভ্রূণ প্রতিস্থাপন কী যন্ত্রণাদায়ক?
সাধারণ ভাবে এটি যন্ত্রণামুক্ত পদ্ধতি বলা চলে। অ্যানাস্থেশিয়া ছাড়াই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তবে ইনজেকশনের সময় সামান্য যন্ত্রণা হতে পারে, ক্যাথিটার ঢোকানোর সময়ও অস্বস্তি হয়। আলট্রাসাউন্ডের জন্য পূর্ণ মূত্রথলি (ফুল বাল্ডার) দরকার, যাতে অনেকের অসুবিধা হয়। তবে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে বেশি সময় লাগে না।
২) জরায়ুতে ক’টি ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা উচিত?
এই সংখ্যা নির্ভর করে মহিলার বয়স ও ক’টি উন্নত মানের ডিম্বাণু পাওয়া গিয়েছে তার উপর। শুরুতেই এই নিয়ে আলোচনা করে নেওয়া ভাল। সাধারণত ৩৭ এর কম বয়স হলে এবং প্রথমবার আইভিএফ হলে একটি ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়। ৪০-এর বেশি বয়স হলে দু’টি ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। মহিলার গর্ভধারণের সম্ভাবনা খুব কম থাকলে তিন বা ততোধিক ভ্রূণও ( হেভি লোড ট্রান্সফার বা এইচএলটি) প্রতিস্থাপন করা হয়।
Related Posts
Written by:
Dr Souren Bhattacharjee
Consultant, Birla Fertility & IVF
Dr Souren Bhattacharjee possesses 32+ years of experience as an IVF Specialist. He has extensive experience in the management of male and female infertility, including IVF and Ultrasound. Along with this, Dr Souren has encountered more than 6000 IVF cycles with a very high success rate. Dr Bhattacharjee is a graduate of Gauhati University, 1983. He earned a diploma in gynaecology and obstetrics in 1991 from Dr MGR Medical University. In 1994, he did his Member Royal College of Obstetricians & Gynaecologists from London and in 2009, he did his Fellow of the Royal College of Obstetricians & Gynaecologists from London.
Over 32 Years of Experience
Kolkata, West Bengal
Our Services
Fertility Treatments
Problems with fertility are both emotionally and medically challenging. At Birla Fertility & IVF, we focus on providing you with supportive, personalized care at every step of your journey towards becoming a parent.Male Infertility
Male factor infertility accounts for almost 40%-50% of all infertility cases. Decreased sperm function can be the result of genetic, lifestyle, medical or environmental factors. Fortunately, most causes of male factor infertility can be easily diagnosed and treated.We offer a comprehensive range of sperm retrieval procedures and treatments for couples with male factor infertility or sexual dysfunction.