ভারী জরায়ু কি? (Bulky Uterus in Bengali)
- Published on February 03, 2023

Table of Contents
বর্ধিত জরায়ুর চিকিৎসায় দেরি নয়
আমরা জানি, মাতৃজঠরে জরায়ুর মধ্যে বেড়ে ওঠে ভ্রূণ। সেই কারণে গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের জরায়ুর আকার বাড়তে থাকে। এমনি সময় ছোট্ট হাতের মুঠোর মতো দেখতে জরায়ুটি পূর্ণ গর্ভাবস্থায় তরমুজের বা ফুটবলের আকার নেয়। কিন্তু অনেকসময় গর্ভধারণ না করা সত্ত্বেও মহিলাদের জরায়ুর আকার বেড়ে (বাল্কি ইউটেরাস) যায়। বিভিন্ন স্ত্রীরোগের কারণে এটা হতে পারে। আপাতভাবে বিষয়টি চিন্তার না হলেও এবং অনেকসময় আপনা থেকেই সেরে গেলেও ক্ষেত্রবিশেষে স্ত্রীরোগের কারণগুলি ওজন বৃদ্ধি, সন্তানধারণে অক্ষমতার মতো সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। এমনকী ক্যানসারের মতো গুরুতর অসুখও মাথা চাড়া দিতে পারে পরবর্তীকালে। তাই ঋতুস্রাবে খুব বেশি অস্বাভাবিকত্বের পাশাপাশি তলপেটটা বড়, ভারী মনে হলে কিংবা ব্যথা বোধ, অস্বস্তি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
বর্ধিত জরায়ু কী
সাধারণ ভাবে মেয়েদের শরীরে যে জরায়ু থাকে তা লম্বায় ৮ সেন্টিমিটার, প্রস্থে ৫ ও ৪ সেন্টিমিটার মতো পুরু হয়। কোনও কারণে জরায়ুর আকার এর থেকে অনেকটা বেড়ে গেলে তাকে বলে বাল্কি ইউটেরাস বা বর্ধিত জরায়ু।
ভারী বা বর্ধিত জরায়ুর লক্ষণ
শরীরের ভিতরে জরায়ুর আকার বেড়ে গেলেও অধিকাংশ সময় তা বাইরে থেকে বোঝা যায় না। অনেক সময় তলপেটটা ভারী লাগতে পারে বা তলপেটের কাছে জামা আঁটোসাঁটো লাগে। এছাড়া অন্যান্য কিছু লক্ষ্মণ থেকেও বোঝা যেতে পারে এই সমস্যার কথা। সেগুলি হল –
১) অনিয়মিত বা বিলম্বিত ঋতুস্রাব।
২) ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত, জমাটবাঁধা রক্ত। কিছু ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হয়ে সারা মাস ধরে চলতে থাকে।
৩) অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে শরীরে রক্তের পরিমাণ কমতে থাকে, যার জেরে মাথা ঘোরা, হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যাওয়ার মতো লক্ষ্মণগুলো প্রকাশ পায়, দুর্বল লাগে এবং ফ্যাকাশে দেখায়।
৪) শুধু ঋতুস্রাবের সময় নয়, এই সমস্যা হলে অন্য সময়েও তলপেট, তলপেটের পেছন দিক, কোমর ও পিঠে ব্যথাবোধ হয়। পায়ে ফোলা ভাব ও ব্যাথা হতে পারে।
৫) জরায়ুর আকার বেড়ে অনেক সময় পাচনতন্ত্রে প্রভাব ফেলে। রোগীর বমি পেতে পারে। সেই সঙ্গে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
৬) জরায়ুর আকারবৃদ্ধির সঙ্গে শরীরে ওজন বাড়ার একটা সমানুপাতিক সম্পর্ক আছে।
৭) সন্তানধারণে অক্ষমতা ও গর্ভপাত এই সমস্যার অন্যতম লক্ষ্মণ।
৮) যৌনসম্পর্ক স্থাপনের সময় ব্যথা লাগে।
৯) কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে।
১০) বর্ধিত জরায়ু (বিশেষ করে ফাইব্রয়েডের সমস্যা থাকলে) মূত্রাশয়ের উপরে চাপ দেয়। ফলে বারবার প্রস্রাবের বেগ আসে।
জরায়ুর আকার বৃদ্ধির কারণ
জরায়ু বেড়ে যাওয়ার সমস্যাটি নানা কারণে হতে পারে।
- ফাইব্রয়েডস- এককথায়, জরায়ুতে বিনাউন (ক্যানসার নয়) টিউমার হল অন্যতম প্রধান কারণ। সন্তানধারণের বয়সে (১৫-৪৫) মেয়েদের ২০-৪০ শতাংশের জরায়ুতে ফাইব্রয়েড বা টিউমার থাকে। এই টিউমার মটর দানার আকৃতি থেকে শুরু করে টেনিস বলের মতো বড়সড় আকারের হতে পারে। সংখ্যায় কম ও ছোট আকারের ফাইব্রয়েড থাকলে বিশেষ সমস্যা হয় না এবং এর উপস্থিতি বাইরে থেকে বোঝাও যায় না। কিন্তু এটা সংখ্যায় ও আকারে অনেক বেড়ে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই জরায়ুর আকার বেড়ে যায় ও নানা সমস্যা হয়।
মূলত শরীরের তিনটি জায়গায় ফাইব্রয়েডস তৈরি হয়:
১) সাবসেরাস- জরায়ুর দেওয়ালের বাইরের দিকে,
২) ইন্ট্রামিউরাল – জরায়ুর দেওয়ালের মধ্যে,
৩) সাব মিউকাস- জরায়ুর যে অংশ থেকে ঋতুস্রাব হয়।
সাব-মিউকাস ফাইব্রয়েডস-এই বেশি আক্রান্ত হন মহিলারা। আর এটিই সবচেয়ে বেশি ঝামেলার সৃষ্টি করে। এতে ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে অসম্ভব যন্ত্রণা এবং অত্যধিক রক্তপাত হয়। সারা মাস ধরে রক্তপাতও হতে পারে। এই ধরণের একটা ছোট্ট ০.৫ সেন্টিমিটার আকারের ফাইব্রয়েডও সমস্যায় ফেলতে পারে। গর্ভপাত এবং সন্তান না হওয়ার জন্য এই ফাইব্রয়েড দায়ী থাকে। কারণ জরায়ুর যে অংশে ভ্রূণ থাকে, ঠিক সেই অংশে এই টিউমারটি অবস্থান করে।
জরায়ুতে ফাইব্রয়েড কেন হয়, সে সম্পর্কে এখনও সুনির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে পারিবারিক ইতিহাসে অর্থাৎ বাড়িতে মা, মাসি, দিদিদের এই সমস্যা থাকলে রোগের ঝুঁকি বেশি হয়। ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন ঋতুচক্রের সময় জরায়ুর আবরণকে (লাইনিং) উদ্দীপিত করে, যার ফলে ফাইব্রয়েড তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া ছোট ফাইব্রয়েডের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এই সব হরমোন। তাই সন্তানধারণের সময়কালে ফাইব্রয়েডের সমস্যা হয় এবং মেনোপজের সময় থেকে এগুলি ক্রমশ শুকিয়ে ছোট হয়ে আসে। - অ্যাডিনোমায়োসিস- জরায়ুর চার পাশে যে পেশীর স্তর রয়েছে, তাতে স্ট্রোমা বা এন্ডোমেট্রিয়াল গ্রন্থি তৈরি হওয়াকে বলে অ্যাডিনোমায়োসিস। এটি জরায়ুর এক দিকে হতে পারে আবার পুরো জরায়ু জুড়েও হতে পারে। এর ফলে জরায়ু দুই গুণ থেকে তিন গুণ বেড়ে যেতে পারে। সাধারণত ৩০-এর বেশি বয়সী মহিলাদের এই সমস্যা দেখা যায় বিশেষত যাদের সি-সেকশনের সাহায্যে সন্তান প্রসব হয়েছে। এর সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি এখনও। তবে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ বেশি থেকে এই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার একটা সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে। যে কারণে মেনোপজের পরে এই সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
- পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম- সন্তানধারণের সময়কালের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ মহিলা এই সমস্যায় ভোগেন। সমস্যাটি গুরুতর হলে জরায়ুর আকার বেড়ে যেতে পারে।
- জরায়ুতে ক্যানসার- জরায়ুর আকার বেড়ে যাওয়া এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসারের অন্যতম লক্ষ্মণ। সাধারণত ৫০ বা তার বেশি বয়সী মহিলাদের এই অসুখ হয়।
- পেরিমেনোপজ- মেনোপজের আগে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যের সমস্যা থেকে অনেকসময় জরায়ুর আকার বেড়ে যায়। তবে, মেনোপজ হয়ে যাওয়ার পর এই সমস্যা নিজে থেকে মিটেও যায়।
- জরায়ুতে সিস্ট- এমনিতে সিস্ট থাকলে খুব একটা সমস্যা হয় না। কিন্তু সিস্টের আকার খুব বড় হয়ে গেলে জরায়ুর আকার বাড়ে।
বর্ধিত জরায়ুর চিকিৎসা
বর্ধিত জরায়ুর সমস্যা রয়েছে আন্দাজ করলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ট্রান্সভ্যাজাইনাল আলট্রাসাউন্ড করতে দেন চিকিৎসকেরা। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যাটা আরও ভাল ভাবে বোঝার জন্য এমআরআই করতে বলা হয়। সাধারণত দেখা যায় ফাইব্রয়েড বা অ্যাডিনোমায়োসিসের কারণে জরায়ুর আকার বেড়ে গিয়ে
ফাইব্রয়েড যাতে বাড়তে না পারে তার জন্য গর্ভনিরোধক বড়ি খেতে বলতে পারেন চিকিৎসক। ছোট্ট একটা সার্জারি করে সাবমিউকাস ফাইব্রয়েডের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। দিনের দিনই এটা হয়ে যায়। জরায়ুর মধ্যে ক্যামেরা দিয়ে দেখে হিস্টেরোস্কোপ-এর সাহায্যে টিউমারটি বাদ দেওয়া হয়। সকালে হাসপাতালে ভর্তি হলে বিকেলের মধ্যেই রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে, ওই দিনটা বিশ্রামে থাকতে হবে।
অন্য দু’ধরনের ফাইব্রয়েড খুব বেশি সমস্যা না করলে অস্ত্রোপচারের দরকার পড়ে না। তবে, কোনও কারণে ফাইব্রয়েডের আকার ৬ সেন্টিমিটারের বেশি হয়ে গেলে অস্ত্রোপচার করার দরকার হয়। সাবসেরাস ফাইব্রয়েড খুব বড় হয়ে গেলে মূত্রথলি বা মলদ্বারের পথ আটকে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করে বাদ দিতে হবে। ফাইব্রয়েড সার্জারির পরে ৬ মাস পর্যন্ত গর্ভধারণের চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। আর সন্তানধারণের চেষ্টা করছেন যে সব দম্পতি তাদের জন্য ফাইব্রয়েডের চিকিৎসায় ইউটেরাইন আর্টারি এমবোলাইজেশন, এমআরআই গাইডেড ফোকাস আলট্রাসাউন্ড-এর মতো পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া যায় না।
সমস্যা আরও গুরুতর হলে বা অস্ত্রোপচার করে ফাইব্রয়েড বাদ দেওয়া যাচ্ছে না যেখানে, সেখানে পুরো জরায়ুটিই বাদ দেওয়া হতে পারে (হিসটেরেক্টোমি) তবে ঝট করে এটা করা হয় না। সমস্যা খুব বেশি হলে কিংবা কোনও মহিলা তার মেনোপজের সময়ে উপস্থিত হলে বা আর সন্তানধারণ করতে না চাইলে তবেই জরায়ু সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়।
অ্যাডিনোমায়োসিসের তেমন কোনও চিকিৎসা নেই। গোনাডোট্রপিন রিলিজিং হরমোন ইনজেকশন দিয়ে এই সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা যায় যাতে মহিলা সন্তানধারণ করতে পারে। ব্যাথা বা খুব বেশি রক্তক্ষরণ হলে তা কমানোর জন্য ওষুধ দেন চিকিৎসকেরা। পেলভিক অংশে ব্যাথার জন্য ইষদুষ্ণ জলে স্নান ও হট ব্যাগের সাহায্য নেওয়া যায়।
ক্যানসারের কারণে জরায়ুর আকার বেড়ে গেলে চিকিৎসার পথ পুরোটা বদলে অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপির দিকে চলে যায়।
বর্ধিত জরায়ুর সমস্যায় কী করণীয়
১) বাল্কি ইউটেরাসের সমস্যা ধরা পড়লে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। খুব কম ক্ষেত্রেই এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। তবে তত্ত্বাবধানের জন্য নিয়মিত শ্রোণী (পেলভিক) পরীক্ষা করা দরকার।
২) জরায়ুর আকার বৃদ্ধির সঙ্গে ওজন বাড়ে। আবার চর্বি কোষগুলি বেশি করে ইস্ট্রোজন তৈরি করে এবং হরমোনের পরিবর্তন ঘটিয়ে ফাইব্রয়েডের আকার বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ওজন কমিয়ে ফাইব্রয়েডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৩) সুস্থ জীবনযাত্রা অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর খাবার, ব্যায়াম বা নিয়মিত হাঁটা, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং উদ্বেগহীন দিন কাটাতে পারলে এই শারীরিক সমস্যাকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রেড মিট বা বেশি ক্যালোরির খাবার না খেয়ে সবুজ শাকসব্জি, ফলমূল খেতে হবে। শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি দরকার।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নমালা
১) জরায়ুতে ফাইব্রয়েড থাকলে ক্যানসারের ঝুঁকি কতটা?
খুব কম ফাইব্রয়েড সমস্যা ক্যানসারে পরিণত হয়। সাড়ে তিনশো ফাইব্রয়েডের রোগীর মধ্যে হয়তো এক জনের ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে। মুশকিল হল কোনটি থেকে ক্যানসার হতে পারে, কোনটিতে নয়, সেটা আগে থেকে বলা মুশকিল। সে ক্ষেত্রে এলডিএইচ-এর রক্ত পরীক্ষা করা হয় এবং আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে একটি ডপলার স্টাডি করে দেখা হয় টিউমারটিতে শিরার সংখ্যা ও রক্ত সরবরাহ কেমন। শিরার সংখ্যা বেশি থাকলে ফাইব্রয়েড ম্যালিগন্যান্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
২) বাল্কি ইউটেরাস বা জরায়ু বড় হয়ে গেলে কী সন্তানধারণ সম্ভব?
হ্যাঁ, অবশ্যই সম্ভব। জরায়ু কেন বড় হয়ে যাচ্ছে সেটা জানতে হবে। যেমন ফাইব্রয়েড থাকলেই যে তা সন্তানধারণের পথে বাধা হবে এমনটা নয়। তাছাড়া, ফাইব্রয়েডের সমস্যার চিকিৎসা রয়েছে। অ্যাডিনোমায়োসিসের সমস্যায় জটিলতা তুলনায় বেশি হলেও এরও চিকিৎসা রয়েছে। শুরুতে ওষুধ, হরমোনাল থেরাপি করে কারণগুলি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। তারপরেও সন্তানধারণ সম্ভব না হলে অস্ত্রোপচারের সাহায্য নেওয়া হয়।
Related Posts
Written by:
Dr Swati Mishra
Consultant
Dr Swati Mishra is an internationally trained obstetrician-gynecologist and reproductive medicine specialist. She has trained and worked at some of the most reputed medical institutions in India and abroad. She has worked as a visiting consultant at multiple reputed reproductive medicine centers across Kolkata and as a chief consultant in ARC Fertility Center, Kolkata. Her unique skills and diverse work experience in India and the USA have made her a respected name in the field of IVF. She is also a trained specialist in all types of laparoscopic, hysteroscopic and operative procedures related to fertility treatment
Over 18 years of experience
Kolkata, West Bengal
Our Services
Fertility Treatments
Problems with fertility are both emotionally and medically challenging. At Birla Fertility & IVF, we focus on providing you with supportive, personalized care at every step of your journey towards becoming a parent.Male Infertility
Male factor infertility accounts for almost 40%-50% of all infertility cases. Decreased sperm function can be the result of genetic, lifestyle, medical or environmental factors. Fortunately, most causes of male factor infertility can be easily diagnosed and treated.We offer a comprehensive range of sperm retrieval procedures and treatments for couples with male factor infertility or sexual dysfunction.