Trust img
পিটুইটারি অ্যাডেনোমার: লক্ষণ, কারণ চিকিত্সা ও প্রকার

পিটুইটারি অ্যাডেনোমার: লক্ষণ, কারণ চিকিত্সা ও প্রকার

Dr. Swati Mishra
Dr. Swati Mishra

MBBS, MS (Obstetrics & Gynaecology)

15+ Years of experience

পিটুইটারি হল মস্তিষ্কে অবস্থিত এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি যা আমাদের শরীরের অন্য অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিগুলির কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। এই জন্য পিটুইটারিকে মাস্টার গ্ল্যান্ড বা প্রভু গ্রন্থি বলা হয়। এহেন গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গে অ্যাডিনোমা বা টিউমার গজিয়ে উঠলে শরীরে যে নানান সমস্যা দেখা দেবে, তা বলা বাহুল্য। আশার কথা, এই টিউমার ক্যানসারহীন, ফলে শরীরের অন্যত্র  ছড়িয়ে পড়ে না এবং ওষুধ, রেডিয়েশন বা অস্ত্রোপচারের সাহায্যে এই টিউমার অপসারণ কিংবা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমা কী

পিটুইটারি অ্যাডিনোমা হল পিটুইটারি গ্রন্থিতে গজিয়ে ওঠা ক্যানসারহীন টিউমার। সমীক্ষা বলছে, প্রতি এক লক্ষ জন পিছু ৭৭ জনের পিটুইটারি অ্যাডিনোমা রয়েছে। বাস্তবে সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি বলেই মনে করেন চিকিৎসকেরা, কম করে ২০ শতাংশ। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই টিউমারটি শুরুতে যখন ছোট থাকে, কোনও উপসর্গ টের পাওয়া যায় না। প্রায় ৭৫ শতাংশ পিটুইটারি অ্যাডিনোমা নিজে আলাদা করে হরমোন ক্ষরণ করলেও শরীরে হরমোনের ভারসাম্যের অভাবজনিত রোগগুলির উৎস আপাতদৃষ্টিতে নজরে আসে না। টিউমারটি আকারে বাড়তে বাড়তে যখন তলার স্নায়ু ও আশপাশের কাঠামোতে চাপ সৃষ্টি করে, তখন মাথাব্যথা ও দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হয়। পিটুইটারিতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে দৃষ্টিশক্তি চিরতরের জন্যও চলে যেতে পারে।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমার প্রকারভেদ

পিটুইটারি অ্যাডিনোমা নানা প্রকারের হয়ে থাকে। কিছু অ্যাডিনোমা হরমোন ক্ষরণ করে (ফাংশনিং অ্যাডিনোমা)। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত পিটুইটারি হরমোন ক্ষরণের জন্য শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। আবার কিছু অ্যাডিনোমা হরমোন ক্ষরণ করে না (নন-ফাংশনিং অ্যাডিনোমা)। আকারে ছোট থাকলে এই ধরনের টিউমারে সমস্যা হয় না। কিন্তু আকারে বাড়তে বাড়তে আশপাশের নার্ভ বা কাঠামোয় চাপ সৃষ্টি করলে সমস্যা শুরু হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের অ্যাডিনোমারই চিকিৎসা করে অপসারণের দরকার হয়।

এছাড়া আকারের ভিত্তিতেও পিটুইটারি অ্যাডিনোমার প্রকারভেদ হয়। ১০ মিলিমিটার বা এক সেন্টিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের টিউমার হলে তাকে বলে মাইক্রোঅ্যাডিনোমাস। আর ১০ মিলিমিটারের থেকে বড় আকারের হলে তাদের বলে ম্যাক্রোঅ্যাডিনোমাস।

পিটুইটারি অ্যাডেনোমা প্রকার

চারটি প্রধান পিটুইটারি অ্যাডেনোমাস প্রকার রয়েছে। প্রতিটি প্রকারের নামকরণ করা হয়েছে এটি যে হরমোনটি অতিরিক্ত উত্পাদন করে তার নাম অনুসারে।

1. এন্ডোক্রাইন-সক্রিয় পিটুইটারি টিউমার

এই টিউমারগুলি এমন হরমোন তৈরি করে যা শরীরের এন্ডোক্রাইন সিস্টেমে কাজ করে এবং হয় অকার্যকর বা কার্যকরী হতে পারে।

অকার্যকর টিউমারগুলি একটি একক হরমোনের অপর্যাপ্ত পরিমাণে উত্পাদন করে, যখন কার্যকরী টিউমারগুলি এক বা একাধিক হরমোনের অত্যধিক পরিমাণে নিঃসরণ করে।

2. এন্ডোক্রাইন-নিষ্ক্রিয় পিটুইটারি টিউমার

কার্যকরী অ্যাডেনোমাসের মধ্যে রয়েছে প্রোল্যাক্টিনোমাস (যা অত্যধিক মাত্রায় প্রোল্যাক্টিন নিঃসরণ করে) এবং টিউমার যা বৃদ্ধির হরমোন নিঃসরণ করে (প্রায়ই সোমাটোট্রপস নামে পরিচিত)।

প্রোল্যাক্টিনোমাস প্রায়শই অ্যামেনোরিয়া, গ্যালাক্টোরিয়া, বন্ধ্যাত্ব, যৌন কর্মহীনতা এবং দৃষ্টিশক্তির ব্যাঘাত যেমন ঝাপসা দৃষ্টি বা পার্শ্ব দৃষ্টি হারানোর সাথে যুক্ত থাকে।

3. মাইক্রোডেনোমা

গ্রন্থি কোষের কাছাকাছি ছোট টিউমার দেখা দেয় কিন্তু তাদের আক্রমণ করে না। এটি সাধারণত অকার্যকর এবং ম্যাক্রোডেনোমাসের তুলনায় এর চারপাশের কম ক্ষতি করে।

এগুলি সাধারণত সৌম্য, তবে যদি তারা একটি উল্লেখযোগ্য আকারে বৃদ্ধি পায় তবে তারা উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। যদি চিকিত্সা না করা হয়, সময়ের সাথে সাথে, মাইক্রোডেনোমাস ম্যাক্রোডেনোমাস হতে পারে।

4. ম্যাক্রোডেনোমা

একটি ম্যাক্রোডেনোমা হল একটি পিটুইটারি অ্যাডেনোমা যা ইমেজিং স্টাডিতে দেখা যায় এমন যথেষ্ট বড়।

যদি একটি পিটুইটারি অ্যাডেনোমা 1 সেন্টিমিটারের চেয়ে বড় হয় বা যদি এটির আশেপাশের কাঠামো সংকুচিত হয় তবে এটি ম্যাক্রোডেনোমা হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।

ম্যাক্রোঅ্যাডিনোমাসের লক্ষ্মণ

১) দৃষ্টিশক্তির সমস্যা- পিটুইটারি গ্রন্থিতে ম্যাক্রোঅ্যাডিনোমা যাদের রয়েছে তাদের মধ্যে প্রায় ৪০-৬০ শতাংশের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা (আবছা বা দু’টো দেখা) হয়। অ্যাডিনোমাগুলি আকারে বাড়তে বাড়তে অপটিক ক্ষায়াজ়মার (যেখানে দু’টো অপটিক নার্ভ পরস্পরকে উল্লঙ্ঘন করে) উপরে চেপে বসলে এই সমস্যা হয়। চোখের দু’পাশের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসে। দৃষ্টিশক্তি একেবারের জন্যও চলে যেতে পারে।

২) মাথাব্যথা- মাথাব্যথা হল প্রাথমিক লক্ষ্মণ। টিউমার বেড়ে গিয়ে আশপাশের টিস্যুতে চাপ সৃষ্টি করার জন্য এমনটা হয়।

৩) হরমোনের অভাব- ম্যাক্রোঅ্যাডিনোমা পিটুইটারি গ্রন্থির টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে। তখন সেখান থেকে হরমোনের ঘাটতি হয় (হাইপোপিটুইটারিজ়ম)। এলএইচ ও এফএসএইচ হরমোনের অভাবে টেস্টোস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন কমে যায় (হাইপোগোনাডিজ়ম)। এর ফলে মেয়েদের হট ফ্লাশ, যৌনাঙ্গে শুষ্কতার সমস্যা হয়। ছেলেদের ক্ষেত্রে লিঙ্গশৈথিল্য, দেহে চুল, গোফ-দাঁড়ি কম গজায়। টিএসএইচ হরমোনের অভাবে থাইরয়েডের হরমোন ক্ষরণ কম হয় (হাইপোথাইরয়েডিজম)। এর ফলে শরীরে ক্নান্তি, কোষ্ঠকাঠিন্য, শুষ্ক খসখসে ত্বক ইত্যাদি সমস্যা হয়। আর গোনাডোট্রপিনের অভাবে গ্রোথ হরমোনের ঘাটতি হয়।

ফাংশনিং অ্যাডিনোমার লক্ষ্মণ-

অ্যাডিনোমাটি কী হরমোন ক্ষরণ করে সেই অনুযায়ী এর প্রকারভেদ হয়।

১) প্রোল্যাকটিনোমাস- পিটুইটারি ফাংশনিং অ্যাডিনোমার মধ্যে সবচেয়ে বেশি যেটা দেখা যায় (১০-এর মধ্যে ৪) সেটি হল প্রোল্যাকটিনোমাস বা ল্যাক্টোট্রোফ অ্যাডিনোমাস। এটি অতিরিক্ত প্রোল্যাকটিন ক্ষরণ করে (হাইপারপ্রোল্যাকটিনেমিয়া), যার ফলে শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা কমে আসে। এই থেকে সন্তানধারণে অক্ষমতার সমস্যাও হতে পারে। এর আর একটা লক্ষ্মণ হল স্তনবৃন্ত থেকে দুধের মতো সাদা তরল ক্ষরণ (গ্যালাক্টোরিয়া)।

২) সোমাটোট্রোফ অ্যাডিনোমাস- পিটুইটারি টিউমারের প্রতি ১০টিতে ২টি হল সোমাটোট্রোফ অ্যাডিনোমাস, যারা অতিরিক্ত গ্রোথ হরমোন ক্ষরণ করে (সোমাটোট্রপিন)। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই হরমোন অতিরিক্ত হলে হাড়ের উপরে খারাপ প্রভাব পড়ে এবং অস্বাভাবিক ভাবে হাত-পা বাড়ে। এমনকী মুখের গড়নও পরিবর্তিত হয়। এছাড়া শরীরের মেটাবলিক ফাংশনকেও এই হরমোন প্রভাবিত করে বলে অনুসারী নানা রোগ হয়। শিশু বা কিশোরদের ক্ষেত্রে দ্রুত বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত অস্বাভাবিক উচ্চতা দেখা যায়।

৩) কর্টিকোট্রোফ অ্যাডিনোমাস- এই ধরনের টিউমার তুলনায় কম (১০টির মধ্যে একটি)। এই টিউমার অতিরিক্ত এসিটিএইচ (অ্যাড্রিনোকর্টিকোট্রপিক) হরমোন ক্ষরণ করে, যা অ্যাড্রিন্যাল গ্রন্থি থেকে স্টেরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়। কর্টিসল অতিরিক্ত ক্ষরণের ফলে কুশিং সিনড্রোম হয়। যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ, অস্টিওপোরোসিস, টাইপ টু ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ হতে পারে। এই সিনড্রোমে আক্রান্তদের অল্প আঘাতেই ক্ষতের সৃষ্টি হয়, দুর্বল পেশী থাকে।

৪) থাইরোট্রোফ অ্যাডিনোমাস- এই টিউমার তুলনায় বিরল। এটি অতিরিক্ত টিএসএইচ ক্ষরণ করে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোন ক্ষরণ হয় (হাইপারথাইরয়েডিজ়ম)। এর ফলে শরীরের মেটাবলিজম বেড়ে যাওয়ায় হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়ে, ওজন কমে যায়, প্রচণ্ড ঘাম হয়, হাত কাঁপে।

৫) গোনাডোট্রোফ অ্যাডিনোমাস- এই অ্যাডিনোমা অতিরিক্ত গোনাডোট্রপিনস্ ক্ষরণ করে। যার ফলে মাসিক ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়। ওভারিয়ান হাইপারস্টিমুলেশন সিনড্রোম দেখা দিতে পারে। ছেলেদের ক্ষেত্রে বড় শুক্রাশয়, ভারী গলা এবং শরীরে লোম, গোঁফ, দাঁড়ি বেশি গজায়। ছোটদের বয়ঃসন্ধিকাল এগিয়ে আসে।

কেন পিটুইটারিতে টিউমার হয়

বিজ্ঞানীরা এই টিউমার হওয়ার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত না হলেও ডিএনএ-র মিউটেশনের সঙ্গে এর যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করেন, যার ফলে পিটুইটারি গ্রন্থিটি অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে এবং উপবৃদ্ধি তৈরি হয়। এছাড়াও অন্য কিছু জিনগত অবস্থার জন্য অ্যাডিনোমা হতে পারে। যার মধ্যে অন্যতম হল মাল্টিপল এন্ডোক্রিন নিওপ্লাসিয়া টাইপ ১ ও ৪, কার্নে কমপ্লেক্স, এক্স-এলএজি সিনড্রোম, নিউরোফাইব্রোমাটোসিস টাইপ ১ ইত্যাদি।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমা নির্ণয়

পিটুইটারি অ্যাডিনোমার একটা সমস্যা হল আকারে ছোট হলে এটি সহজে ধরা পড়ে না। কারণ সেক্ষেত্রে অ্যাডিনোমাটি ফাংশনিং হলেও হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট বাইরে থেকে বোঝা কঠিন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে টিউমার আকারে বড় হলে মাথা ব্যথা বা দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হয়। তখন চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয় রোগী। টিউমার হয়েছে কি না জানতে এমআরআই বা সিটি স্ক্যান করা হয়। এই দু’টি পরীক্ষায় মাথার ভিতরে কোনও টিউমার থাকলে তা জানা যায়। এছাড়া রক্ত পরীক্ষা করে হরমোনের মাত্রা বা দৃষ্টিশক্তির পরীক্ষা করেও পিটুইটারি অ্যাডিনোমার উপস্থিতি সম্পর্কে আন্দাজ পাওয়া যেতে পারে।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমার চিকিৎসা

  • সার্জারি- ট্রান্সফেনয়ডাল সার্জারি পদ্ধতিতে নাক ও আনুনাসিক গহ্বরের মধ্য দিয়ে সার্জিক্যাল যন্ত্র ও এন্ডোস্কোপ (ছোট্ট ক্যামেরা লাগানো ফাইবারের টিউব) প্রবেশ করিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। পিটুইটারি গ্ন্যান্ডের ঠিক নীচে থাকে আনুনাসিক গহ্বরের পিছনের দেওয়াল। ফলে এই পথ দিয়ে সার্জারি করলে ব্রেনকে ছুঁতে হয় হয় না। সেই কারণে এই অস্ত্রোপচারে ব্রেনের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে না। বাইরে থেকে দৃশ্যমান কাটার দাগও থাকে না। তাই এই পদ্ধতিতেই প্রায় ৯৫ শতাংশ পিটুইটারি টিউমারেরর অপসারণ করা হয়। তবে, বড় টিউমার হলে সরু এই পথে অস্ত্রোপচার সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ক্র্যানিওটোমি পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। মাথার খুলির এক দিক কেটে এই ওপেন সার্জারি করা হয়। এটি তুলনায় জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ।
  • ওষুধ- অ্যাডিনোমা সঙ্কোচন করা এবং উপসর্গ কমানোর কিছু ওষুধও রয়েছে। বিশেষ করে প্রোল্যাকটিনোমা, যেটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তা ওষুধ দিয়ে অনেকটাই কমানো যায় এবং প্রোল্যাকটিনের মাত্রাও স্বাভাবিকের মধ্যে চলে আসে। যদিও এই ওষুধের প্রভাবে মাথাঘোরা, বমিভাব, ক্লান্তি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
  • রেডিয়েশন- হাই-এনার্জি এক্স রে দিয়ে অ্যাডিনোমাকে সঙ্কুচিত করা যায়। স্টিরিওট্যাকটিক রেডিওসার্জারির সাহায্যে এই উচ্চমাত্রার রেডিয়েশন প্রয়োগ করা হয়। এই পদ্ধতির কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। যেমন, ভবিষ্যতে সন্তানধারণে সমস্যা হতে পারে, দৃষ্টিশক্তিরও সমস্যা হয় অনেকসময়। টিউমারটি আবার ফিরে আসার ঝুঁকিও থাকে।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমা অপসারণ বা চিকিৎসার পরে অনেক সময়ই (৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে) পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসরণের মাত্রা কমে যায়। একটি-দু’টি হরমোন হতে পারে, আবার সমস্ত হরমোনের ক্ষরণও কমে যেতে পারে (হাইপোপিটুইটারিজ়ম)। এক্ষেত্রে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট ওষুধের সাহায্য নেওয়া ছাড়া অন্য উপায় থাকে না।

পিটুইটারি অ্যাপোপ্লেক্সি কী?

অনেক সময় পিটুইটারি অ্যাডিনোমা এতটাই বড় হয়ে যায় যে ভিতরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। একে বলে পিটুইটারি অ্যাপোপ্লেক্সি। পিটুইটারিতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়েও এই ধরনের জটিলতা হতে পারে। এটি অত্যন্ত গুরুতর একটি অবস্থা। তীব্র মাথা ব্যথা থেকে শুরু করে রক্তচাপ কমে যাওয়া, বমি, মাথা ঘোরা ইত্যাদি উপসর্গ হতে থাকে। দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ হারিয়ে যেতে পারে। এর থেকে বাঁচতে হলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যেতে হবে।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নমালা

১) পিটুইটারি অ্যাডিনোমা বৃদ্ধির হার কেমন?

সাধারণত পিটুইটারি অ্যাডিনোমা ধীর গতিতে বাড়ে। বছরে ১-৩ মিমি সাধারণ বৃদ্ধির হার।

২) পিটুইটারি অ্যাডিনোমা কী ব্রেন টিউমার?

টেকনিক্যালি, পিটুইটারি ব্রেনের অংশ নয়, ব্রেনের সঙ্গে যুক্ত মাত্র। তবে চিকিৎসা পরিভাষায় এটাকে ব্রেন টিউমার হিসাবেই ধরা হয়। যত প্রকারের ব্রেন টিউমার রয়েছে, তার মধ্যে ১০-১৫ শতাংশ পিটুইটারি অ্যাডিনোমা।

৩) পিটুইটারি অ্যাডিনোমা কী রেখে দেওয়া যায়?

আকারে ছোট এবং হরমোন ক্ষরণে অক্ষম হলে সেই টিউমার রেখে দেওয়া যায়, যতক্ষণ না কোনও উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। বস্তুত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অন্য কোনও রোগের কারণে মাথার ইমেজিং টেস্ট করার সময় পিটুইটারি অ্যাডিনোমার উপস্থিতি জানা যায়। তবে, টিউমারটি আকারে বাড়তে থাকলে অপসারণ করতে হবে। আর হরমোন ক্ষরণে সক্ষম পিটুইটারি অ্যাডিনোমার দ্রুত চিকিৎসা দরকার।

To know more

Birla Fertility & IVF aims at transforming the future of fertility globally, through outstanding clinical outcomes, research, innovation and compassionate care.

Need Help?

Talk to our fertility experts

Had an IVF Failure?

Talk to our fertility experts