পিটুইটারি অ্যাডজেনোমার, কারণ, বর্ণনা ও ব্যাখ্যা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করুন

পিটুইটারি হল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ যা আমাদের পক্ষে অন্য অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। এই জন্য পিটুইটারিকে মাস্টার গ্ল্যান্ড বা প্রভু গ্রন্থে বলা হয়েছে। এহেন গুরুত্বপূর্ণ একটি অ্যাডিনোমা বা টিউমার গজিয়েলে দেখা শরীরে যে অঙ্গের সমস্যা সমাধান, তা বলাবাহুল্য। আশার কথা, এই টিউমার ক্যানসারহীন, ফলাফল অন্যত্র পড়ে না এবং টিপো, রেডিয় বা অস্ত্রোপচার সাহায্যে এই উমার অপসারণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমা কী

পিটুইটারি অ্যাডিনোমা হল পিটুইটারি বইটিতে গজিয়ে ওঠা ক্যানসারহীন টিউমার। সমীক্ষা মতামত, প্রতি এক লক্ষ জন পিছু ৭৭ এর পিটুইটারি অ্যাডিনোমা রয়েছে। বাস্তবে সংখ্যাটা অনেক বেশি বলে মনে করেন, কম করে ২০ শতাংশ। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই টিউমারটি যখন ছোট থাকে, উপসর্গটি পাওয়া যায় না। প্রায় ৭৫ শতাংশ পিটুইটারি নিজে নিজেই নিজের হরমোন ক্ষরণ করতে শরীরে হরমোনের ভার্সাম্যের অভাবজনিত রোগের উৎস আপাতদৃষ্টিতে নজরে আসে না। টাইউমারটি ঘোষণায় বাড়তে বাড়তে যখন তলার স্নায়ু আশপাশের আশপাশের চাপে চাপতে হয়, তখন মাথাব্যথা ও দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হয়। পিটুইটারে রক্তক্ষরণ শুরু হলে দৃষ্টিশক্তি চিরতরের জন্যও যেতে পারে।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমার প্রকার ভেদ

পিটাইটরি অ্যাডিনোমা ধরন টুকের হতে থাকে। কিছু অ্যাডিনোমা হরমোন ক্ষরণ করে (ফশনিং অ্যাডিনোমা)। ভার্সাম্য হরমোনের শরীর নষ্ট হয়। আবার কিছু অ্যাডিনোমা হরমোন ক্ষরণ করে না (নন-ফাংশনিং অ্যাডিনোমা)। এই ধরনের টিউমারে সমস্যা হয় না। কিন্তু স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়তে বাড়তে আশপাশের নার্ভ বা জোর দিতে সমস্যা শুরু হয়। সর্বক্ষেত্রে এই ধরনের অ্যানোমারী চিকিৎসা করে অপসারণ করা প্রয়োজন।

কয়েক পদেরও পিটুইটারি অ্যাডিনোমার প্রকারভেদ হয়। ১০ মিলিমিটার বা এক সেন্টিমিটার চেয়ে ছোট আকারের টিউমার হলে তাকে মাইক্রোঅ্যাডিনোমাস বলে। আর ১০ মিলিমিটার থেকে বড় জমা হলে তাদের ম্যাক্রোঅ্যাডিনোমাস বলে।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমার লক্ষ্মণ

দু'ধরনের পিটুইটারি অ্যাডিনোমায় সমস্যা বা উপসর্গ পাওয়া যায়।

১) যদি আমি অনুরোধ করি বড় হয়,

২) যটি টিউমারটি নিজে হরমোন কারনে সক্ষম হয়।

ম্যাক্রোঅ্যাডিনোমাসের লক্ষ্মণ

১) দৃষ্টিশক্তি সমস্যা-পিটুইটারি গ্রন্থে ম্যাক্রোঅ্যাডিনোমা অনুষ্ঠিত হয় তাদের মধ্যে প্রায় ৪০-৬০ শতাংশের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা (আবছা বা দু'টো দেখা)। অ্যাডিনোমাগুলি উচ্চারণে বাড়তে বাড়তে অপটিক ক্ষারযামার (যেখানে দু'টো অপটিক নাভ পরস্পরকে উল্লঙ্ঘন করে) উপরে চেপে বসলে এই সমস্যা হয়। আধিপত্য দু'পাশের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসে। দৃষ্টি শক্তির জন্য যেতে পারে।

২) মাথাব্যথা- মাথাব্যথা হল প্রাথমিক লক্ষ্মণ। টিউমারে গিয়ে আশপাশের টিউসে চাপ দেওয়ার জন্য এমনটা হয়।

৩) হরমোনের অভাব-ম্যাক্রোঅ্যাডিনোমা পিটুইটারি বইটির টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে। তখন থেকে হরমোনের ঘাটতি হয় (হাইপোপিটুইটারিজম)। এলএইচ ও এফএসএইচ এসএইচ অলিক কাউন্সিলোস্টন ও ইস্ট্রোজেন হরমোন যায় (হাইপোগোনাডিজম)। এর ফলে বাজারে হট ফ্ল্যাশ, যৌন যৌনতা শুষ্কতার সমস্যা হয়। তাদের ক্ষেত্রে লিশৈথিল্য, দেহঙ্গে চুল, ছেলে গোফ-দাঁড়ি কম গজায়। টিএসএইচ হরমোনের অভাবে থাইরয়েডের হরমোন বর্ণ কম হয় (হাইপোথাইরয়েডিজম)। এর ফলে শরীরে কন্নান্তি, কোকাথিন্য, স্খসখসে ত্বক ইত্যাদি সমস্যা হয়। আর গোনাডোট্রপিনের অভাবে গ্রোথ হরমোনেরঘাটি হয়।

ফাংশনিং অ্যাডিনোমার লক্ষ্মণ-

অ্যাডিনো কী হরমোন ক্ষরণ করে সেই অনুযায়ী এর রূপভেদ হয়।

১) প্রোল্যাকটিনোমাস- পিটুইটারি ফাইনিং অ্যাডিনোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যেটা দেখা যায় (১০-এর মধ্যে ৪) নির্দেশ প্রোল্যাকটিনোমাস বা ল্যাক্টোট্রফ অ্যাডিনোমাস। এটিকে প্রোমোলকটিন করন (হাইপারপ্রিয়া), যার ফলস্বরূপ শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা ক্ষমতায়ক আসে। এই থেকে সন্তানধারণে অক্ষমতা সমস্যা হতে পারে। এর আর একটা লক্ষ্মণ হল স্তনবৃন্ত থেকে দুধের মতো সাদা তরল ক্ষরণ (গ্যালাক্টোরিয়া)।

২) সোমাটোট্রোফ অ্যাডিনোমাস- পিটুইটারি টিউমার প্রতি ২টি সোমাটোট্রোফ অ্যাডিনোমাস, যারা অতিরিক্ত গ্রোথ হরমোন ক্ষরণ করে (সোমাটোট্রপিন)। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই হরমোন অতিরিক্ত হলে হাড়ের উপরে খারাপ প্রভাব পড়ে এবং অস্বাভাবিকভাবে হাত-পাড়ে। এমনকী মুখের গড়নও পরিবর্তিত হয়। উত্তরে মেটাবলিক ফাংশনকেও এই হরমোন মনে করে অনুসারী রোগ হয়। শিশু বা শিশুদের ক্ষেত্রে দ্রুত বৃদ্ধি এবং অস্বাভাবিক উচ্চতা দেখা যায়।

৩) কর্টিকোট্রোফ অ্যাডিমাস- এই ধরনের উমার নাগরিক কম (১০টির মধ্যে একটি)। এই টিউমার আপড্রোপিসিটিএইচ (অ্যারিনোকর্টিকোট্রক) হরমোন ক্ষরণ করে, যা অ্যাড্রিন্যাল বইটি স্টেরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়। কর্টিসল অতিরিক্ত ক্ষরণের ফল কুশিং সিনড্রোম হয়। যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ, অস্টিওপোরোসিস, টাইপ টুডিয়াবটিস ইত্যাদি রোগ হতে পারে। এই সিনড্রোমে প্রশ্নে ক্ষয়ক্ষতি হয়, আবার পেশী হয়।

৪) থাইরোট্রোফ অ্যাডিমাস- এই টিউমার পরিচয় বিরল। এটিও টিএসএইচ ধারণ করে। ফলে শরীরে মোহর থাইরয়েড ক্ষরণ হয় (হাইপারথাইরয়েডম)। ফলাফলের ফলে মেটাবলিজম বিবর্তন এগিয়েয় হৎস্পন্দনের বাড়ে এর গঠনে যায়, প্রচণ্ড ঘাম হয়, হাত কাঁটা।

৫) গোনাডোট্রোফ অ্যাডিনোমাস- এই অ্যাডিনোমা অতিরিক্ত গোনাডোট্রপিনস ক্ষরণ করে। যার ফলে মাসিক ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়। ওভারিয়ান হাইপারস্টিমুলেশন সিনড্রোম দেখা দিতে পারে। ছেলেদের ক্ষেত্রে বড় শুক্রাশয়, জোর এবং শরীরে লোম, গোঁফ, দাঁড়ি বেশি গজায়। ছোটদের বয়ঃসন্ধিকাল এগিয়ে আসে।

কেন পিটুইটারে টিউমার হয়

নিয়োগারা এই টিউমার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া ডিএনএ-র মিউটেশনের সাথে যোগসূত্র বলে মনে করেন, যার ফলে পিটুইটারি গ্রন্থটি অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে এবং উপবৃদ্ধি হয়। এছাড়াও অন্য কিছু জিনগত অবস্থার জন্য অ্যাডিনোমা হতে পারে। যার মধ্যে হল মাল্টিপল এন্ডোক্রিন নিওপ্লাসিয়া টাইপ ১ ও ৪, কার্নে কমপ্লেক্স, এক্স-এলএজি সিনড্রোম, নিউরোব্রোমাটোসিস টাইপ ১ ইত্যাদি।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমা নির্ণয়

পিটুইটারি অ্যাডিনোমার একটা সমস্যা হল রেকর্ড ছোট হলে এটা সহজে পড়ে না। কারণ সেক্ষেত্রে ডিনোমাটি ফাংশনিং দেখতে হারমোনের ভার্সাম্য নষ্ট হতে পারে। সর্বক্ষেত্রে টিউমার অনুরোধে বড় হলে মাথা ব্যথা বা দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হয়। তখন উত্তরের বাধারস্থ হয় রোগী। টিউমার কি না জানতে এমআরআই বা সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। এই দু'টি পরীক্ষায় মাথার ভিতরের টিউমার থাকলে তা জানা যায়। হরমোনের পরীক্ষা বা দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করে পিটুইট অ্যাডিনোমার উপস্থিতি সম্পর্কে আন্দাজ পাওয়া যেতে পারে।

পিটুইটারি অ্যাডিনোমার চিকিৎসা

• সার্জারি- ট্রাফেনয়ডাল সার্জারি পদ্ধতিতে নাক ও আনুনাসিক গহ্বরের মধ্য দিয়ে সার্জ অ্যাঞ্জিনস যন্ত্র ও এন্ডোস্কোপ (ছোট্ট কংগ্রেস লাগানো ফাঁস চেষ্টা টিউব) খুঁজতে হয়। পিটুইটারি গনডের ঠিক পথেই থাকে। ফলে এই পথ দিয়ে সার্জারি ব্রেনকে ছুঁতে হয় না। সেই কারণে এই অস্ত্রোপচার ব্রেনের ক্ষতি হয় না। উন্মুক্ত থেকে দৃশ্যমান কাটার দাগও থাকে না। তাই এই পদ্ধতিটি প্রায় ৯৫ শতাংশ পিটুইটারি টিউমারের অপসারণ করা হয়। তবে, বড় টিউমার হলে সরু এই পথ অস্ত্রোপচার করা সম্ভব না। সেক্ষেত্রে ক্র্যানিওটোমি পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। মাথার খুলির এক পাশে এই ওপেন সার্জারি করা হয়। এটি স্বাভাবিক ও ঝুঁকিপূর্ণ।
• শক্তি- অ্যাডিনোমা সঙ্কোচন করা উপসর্গ কমানোর কিছু সমন্বয়ও রয়েছে। বিশেষ করে প্রোল্যাকটিনোমা, যেটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তা দিয়ে অনেকটাই কমানো যায় এবং প্রোল্যাকটিনের পার্টিও স্বাভাবিকের মধ্যে আসে। যদিও এই বর্গের প্রভাবে মাথাঘোরা, বমিভাব, বিরোধিতা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
• রেডিয়েশন- হাই-এনার্জি এক্স রে দিয়ে অ্যাডিনোমাকে সঙ্কুচিত করা যায়। স্টিরিওট্যাকটিক রেডিওসার্জারি সাহায্যে এই উচ্চতর রেডিয়েশন প্রয়োগ করা হয়। এই পদ্ধতির কিছু নেতিবাচক দিকে রয়েছে। যেমন, সন্তানধারণে সমস্যা হতে পারে, দৃষ্টি শক্তির সমস্যা হয় অনেক সময়। টিউমারটি আবার ফিরে আসার ঝুঁকিও থাকে।

পিটুয়ারি অ্যাডিনোমা অপসারণ বা চিকিৎসার পরে অনেক সময়ই ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে) পিটুরি বইটি থেকে হরমোন নিঃসরণ পরীক্ষা করা যায়। একটি-টি হরমোন হতে পারে, আবার সমস্ত মোনের ক্ষরণও হরন করতে পারে (হাইপোপিটুইটারিজম)। হরমোন রিপ্লেসে সাহায্য করার জন্য সাহায্য নেওয়া ছাড়া অন্য কিছু থাকে না।

পিটুইটারি অ্যাপোপ্লেক্সি কী?

অনেক সময় পিটুইটারি অ্যাডিনোমা এতটাই বড় হয়ে যায় যে ভিতরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পাল বলে পিটুইটারি অ্যাপোপ্লেক্সি। পিটুইটারে রক্ত ​​সঞ্চালন বন্ধ হয়েও এই ধরনের জটিলতা হতে পারে। এটি অত্যন্ত একটি অবস্থা। তীব্র মাথা ব্যথা থেকে শুরু করে রক্তচাপ করা, বমি, মাথা ঘোরা ইত্যাদি উপসর্গ হতে পারে। দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণরূপে যেতে পারে। এর থেকে বাঁচতে হলে এগিয়ে যেতে হবে।

ভাষা জিজ্ঞাসিত প্রশ্নমালা

১) পিটুইটারি অ্যাডিনোমা বৃদ্ধির হার কি?

সাধারণ পিটুয়ারি অ্যাডিনোমা ধীরতে বাড়ে। ১-৩ মিমি সাধারণ বৃদ্ধি হার।

২) পিটুইটারি অডিনোমা কী ব্রেন টিউমার?

টেকনিটি, পিটুইটারি ব্রেনের অংশ নয়, ব্রেনের সাথে যুক্ত। তবে চিকিৎসা পরিভাষা হিসেবে টিউমার হিসাবে এটা হয়। যত প্রকারের ব্রেন টিউমার আছে, তার মধ্যে ১০-১৫ শতাংশ পিটুইট অ্যাডিনোমা।

৩) পিটুইটারি অ্যাডিনোমা কী দেওয়া যায়?

স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছোট এবং হরমোন ক্ষরণে অক্ষম হলে সেই টিউমারটি দেওয়া যায়, যতক্ষণ না উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। যেখানে সবচেয়ে ক্ষেত্রে অন্য রোগের কারণে মাথার ইমেজিং করার সময় পিটুইট অ্যাডিনোমার উপস্থিতি জানা যায়। তবে, টিউমারটি অনুরোধে বাড়তে থাকলে অপসারণ করতে হবে। আর হরণে সক্ষম পিটুইটারি অ্যাডিনোমার দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।